ঢাকা , সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেনাপোলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যু বার্ষিকী পালণ


আপডেট সময় : ২০২৫-০৬-০১ ০২:১১:১৩
বেনাপোলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যু বার্ষিকী পালণ বেনাপোলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যু বার্ষিকী পালণ
 
 
কামাল হোসেন সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ - আজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছিলেন বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা এবং তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এ


 উপলক্ষে দেশব্যাপি দলটি'র পক্ষ থেকে ২৬ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত ৮ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে: আলোচনা সভা, পোস্টার ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ, কালো ব্যাজ ধারণ, কালো পতাকা উত্তোলন, শহীদ জিয়ার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ এবং দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ।


এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৩০ মে/২০২৫) বিকাল ৩টায় যশোর জেণার বেনাপোল পৌর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন গুলির উদ্যোগে বেনাপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতার মহান ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকীতে পৌর এলাকা সহ এর আশে-পাশের ইউনিয়ন থেকে আগত শত শত মানুষ উপস্থিত হন।



বেনাপোল পৌর বিএনপি'র সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো.আবু তাহের ভারতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশাল ঐ আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- যশোর থেকে আগত যশোর জেলা শাখা বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক-শহিদুল বারী রবু, শার্শা উপজেলা বিএনপি'র উপদেষ্টা-খায়রুজ্জামান মধু, সভাপতি-মো. হাসান জহির, সাধারণ সম্পাদক-মো.নুরুজ্জামান লিটন, ৮৫, যশোর-১শার্শা আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কমিটি'র সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, বেনাপোল সিএন্ডএফ সভাপতি-মো.শামছুর রহমান, শার্শা উপজেলা যুবদল আহবায়ক-মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম, বেনাপোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান-মাসুদুর রহমান মিলন, শার্শা উপজেলা বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক-মো.আশরাফুল ইসলাম বাবু, পৌর বিএনপি'র সহ:সভাপতি-শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ,


সাংগঠনিক সম্পাদক-মো.আকতারুজ্জামান, শার্শা যুবদলের সদস্য সচিব-ইমদাদুল হক ইমদা, বেনাপোল পৌর যুবদল আহবায়ক-মফিজুর রহমান বাবু, সদস্য সচিব-রায়হানুজ্জামান দিপু,শার্শা ছাত্রদল আহবায়ক-শরিফুল ইসলাম চয়ন, পৌর ছাত্রদল আহবায়ক-আরিফুল ইসলাম আরিফ, সদস্য সচিব-ইশতিয়াক আহম্মেদ শাওন, পৌর বিএনপি'র পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মাসুদুর রহমান কাক্কু সহ বিএনপি'র অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।



সমাবেশে বক্তারা বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার এবং ‘জেড ফোর্স’-এর অধিনায়ক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রতিষ্ঠাতা, যা বর্তমানে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।



রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জিয়াউর রহমান কৃষি, শিল্প ও অর্থনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। খালকাটা কর্মসূচি, সবুজ বিপ্লব এবং আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে তিনি দেশের স্বনির্ভরতার ভিত্তি গড়ে তোলেন। নারী ও শিশুদের উন্নয়নেও ছিল তার উল্লেখযোগ্য অবদান। সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেম ছিল তার রাজনৈতিক জীবনের মূল বৈশিষ্ট্য।



শার্শা উপজেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে সংগৃহীত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ-লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান "বীর উত্তম" (১৯৩৬-১৯৮১) ছিলেন, স্বাধীনতার ঘোষক এবং বাংলাদেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনাপ্রধান এবং বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, সেই সাথে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার বাগবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ জিয়াউর রহমান।


তার বাবা মনসুর রহমান ছিলেন, কলকাতার একটি সরকারি বিভাগে কর্মরত একজন রসায়নবিদ। তাঁর শৈশব কেটেছে আংশিক বগুড়ার গ্রামাঞ্চলে এবং আংশিক কলকাতায়। ভারত বিভাজনের পর (১৯৪৭) তার পিতা করাচিতে স্থানান্তরিত হলে জিয়াকে কলকাতার হেয়ার স্কুল ছেড়ে করাচিতে একাডেমি স্কুলের ছাত্র হতে হয়।


তিনি ১৯৫২ সালে সেই স্কুল থেকে তার মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি করাচির ডিজে কলেজে ভর্তি হন। একই বছর তিনি কাকুলে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন।


সামরিক জীবন- জিয়াউর রহমান ১৯৫৫ সালে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করেন। তিনি সেখানে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৫৭ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে স্থানান্তরিত হন। তিনি ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে জিয়াউর রহমান একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে খেমকারান (পাকিস্তান) সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন।


প্রসঙ্গত, তার কোম্পানি যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ কর্মদক্ষতার জন্য সর্বাধিক সংখ্যক বীরত্বের পুরস্কার পান। তিনি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে একজন প্রশিক্ষক নিযুক্ত হন। একই বছরে, তাকে 'কমান্ড' কোর্সে যোগদানের জন্য কোয়েটা (পাকিস্তান) স্টাফ কলেজে পাঠানো হয়।


১৯৬৯ সালে, তিনি জয়দেবপুরে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে যোগদান করেন। সে বছর পশ্চিম জার্মানি থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৭০ সালে "মেজর" পদে অধিষ্ঠিত হন।


এরপর চট্টগ্রামের অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে বদলি হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্ব- ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী (সামরিক জান্তা) তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঘুমন্ত নিরস্ত্র জনগণের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা চালায়। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস গণহত্যা 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে পরিচিত।


মেজর জিয়াউর রহমান সে সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। তারপর ২৬ মার্চ বেতার কেন্দ্রের কর্মীদের সহায়তায় চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জিয়াউর রহমান ও তার সৈন্যরা এভাবেই মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখভাগে আসেন।


মেজর জিয়া এবং তার নেতৃত্বাধীন সশস্ত্র বাহিনী চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী এলাকাকে কয়েকদিন তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে জেড ফোর্সের (Z Force) ব্রিগেড কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কার ‘বীর উত্তম’-এ ভূষিত হন। ১৯৭২ সালের জুন মাসে, তাকে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ করা হয়।


১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে, তিনি একজন ব্রিগেডিয়ার এবং বছরের শেষের দিকে একজন মেজর জেনারেল হন। জিয়াউর রহমান ২৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে সেনাপ্রধান হন। খালেদ মোশাররফ এবং শাফাত জামিলের নেতৃত্বে ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে একটি অভ্যুত্থান ঘটে, তখন জিয়াউর রহমান তার কমান্ড পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং গৃহবন্দী হন। ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লব তাকে রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে পুনরায় সেনাপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে একই দিনে সেনা সদর দফতরে এক বৈঠকে বিচারপতি এএসএম সায়েমকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক করা হয়।


আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ছিলেন, একজন বাংলাদেশী আইনবিদ এবং রাষ্ট্রনায়ক । ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে পাল্টা অভ্যুত্থানের পর তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন।


১৯৭৭ সালের এপ্রিলে অসুস্থতার কারণে সায়েম পদত্যাগ করেন, এবং জিয়াউর রহমান তার স্থলাভিষিক্ত হন। জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশের জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতি।


তিনি ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ থেকে ৩০ মে ১৯৮১ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৮১ সালের এই দিনে দক্ষিণ-পূর্ব বন্দর নগরী চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আওয়ামী লীগের সমর্থক অফিসারদের একটি দল কর্তৃক নিহত হন। সেখানে তিনি তার রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর স্থানীয় নেতাদের মধ্যে সংগঠিত সংঘর্ষের সালিশ করতে চট্টগ্রামে যান। অনুষ্ঠানটি বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় যানজট নিরসনে ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় এস আই মামুন এর নেতৃত্বে বেনাপোল পোর্টথানার একটি পুলিশদল সভা এলাকায় নিয়োজিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে মরহুম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।








 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ